নাগরিসিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ কি ?
ক সনদ (Citizen Charter) হচ্ছে সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রণীত এমন একটি দলিল (document) বা ঘোষনাপত্র (declaration) যাতে উক্ত সেবা প্রদানকরারী প্রতিষ্ঠান কাদের কি ধরণের সেবা প্রদান করবে, কি পরিমাণ প্রদান করবে, কত সময়ের মধ্যে প্রদান করবে, কোন ধরণের সেবা পেতে কি পরিমান খরচ হবে এবং যথাযথভাবে সেবা না পেলে তার প্রতিকারের জন্য জনগন কোথায় ও কি প্রক্রিয়ায় অভিযোগ দাখিল করবে তার বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়। অন্য কথায়, নাগরিক সনদ হচ্ছে সরকারী সেবার মান সম্পর্কে জনগণ ও সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে এক ধরণের সমঝোতা স্বারক (understanding) যাতে জনগণের প্রত্যাশা ও সেবা প্রদানকারীদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটে থাকে।
নাগরিক সনদ কেন ?
নাগরিক সনদ প্রনয়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগনের জন্য সরকারি সেবা প্রাপ্তি সহজতর করা এবং সেবার মানোন্নয়ন করা। নাগরিক সনদের চারটি প্রধান উদ্দেশ্য চিহ্নিত করা যায়-
প্রথমত, জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশার সাথে সংগতি রেখে সেবার মান নির্ধারণ এবং তাদের মতামত নিয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিয়মিত তা পুনঃনির্ধারণ, যাতে করে অব্যহতভাবে সেবার মানোন্নয়ন এবং সেবাকে জনবান্ধব করা সম্ভবপর হয়।
দ্বিতীয়ত, জনগনকে তাদের প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত করা যাতে করে তারা সেবা প্রদানকারীদের কাছে সেসব অধিকার দারি করতে পারে এবং বিভিন্ন পদ্ধতিতে (যেমন, অভিযোগ নিস্পত্তির ব্যবস্থা) সেবা প্রদানকারীদের সামাজিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
তৃতীয়ত, সেবা প্রদানকারীদের সামর্থ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের (যেমন, সহায়তা কাউন্টার প্রতিষ্ঠা) মাধ্যমে তাদের আচরণের উন্নয়ন এবং প্রতিষ্ঠানে এক ধরণের সৌজন্যতার সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো।
চতুর্থত, সেবার মানোন্নয়ন, জনগনের অংশগ্রহণ, অভিযোগ নিস্পত্তি প্রভৃতি উদ্যোগের মাধ্যমে জনগনের আস্থা অর্জন।
নাগরিক সনদের উত্পত্তি:
নাগরিক সনদের উত্পত্তি হয় যুক্তরাজ্যে ১৯৯১ সালে জন মেজরের নেতৃত্বাধীন রক্ষনশীল সরকারের শাসনামলে৷ সে সময় দেশটিতে একটি প্রশ্ন খুব ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছিল৷ তা হল, বেসরকারি সংস্থাগুলো যদি মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারে তবে সরকারি সংস্থাগুলো কেন পারবেনা৷ নাগরিকেরা আরও প্রশ্ন করতে শুরু করে যে, সরকারি সেবার মান যদি ভাল না হয় তাহলে জনগন সেই সেবার জন্য করের মাধ্যমে যে টাকা দিয়েছে তা কেন ফেরতপাবে না - যেমনটি তারা কোনো বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সেবা-সংস্থার কাছ থেকে ফেরত পেত? মূলত এই প্রশ্নগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেই যুক্তরাজ্যে নাগরিক সনদকর্মসূচির সূত্রপাত হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের নাগরিকদের জন্য সরকারি সেবার গুণগত মানের অব্যহত উত্কর্ষ সাধন যাতে তা ব্যবহারকারীদের চাহিদা ওআকাঙ্খা পূরণে সক্ষম হয়৷
বাংলাদেশে নাগরিক সনদ উদ্যোগ :
২০০০ সালে (Public Administration Reform Commission (PARC)) বাংলাদেশের তিনটি মন্ত্রনালয় এবং পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নাগরিক সনদ প্রণয়নের সুপারিশ করে৷ কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত্ এটি বাস্তবায়িত হয়নি৷ ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর সে বছর জুন মাসে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সকল মন্ত্রনালয়ে 'প্রশাসনিক কর্মকান্ডে গতিশীলতা আনয়ন' বিষয়ক একটি পত্রে মন্ত্রনালয়গুলোকে কতিপয় নির্দেশের সাথেনাগরিক সনদ প্রণয়নের নির্দেশও দেওয়া হয়৷ উক্ত চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সকল মন্ত্রনালয় এবং বেশকিছু অধীনস্ত বিভাগে নাগরিক সনদ প্রণয়ন কমিটি গঠনের মাধ্যমে নাগরিক সনদ প্রণয়ন করা হয়৷ স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিক সনদ প্রণয়নের জন্য সংস্থাপন মন্ত্রনালয় সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশের ফলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়-এ নাগরিক সনদ প্রণয়ন করা হয়৷
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নাগরিক সনদ।
সংস্থাপন শাখা |
|
ট্রেজারি শাখা | |
রেকর্ডরুম শাখা |
|
সাধারণ শাখা |
|
আর, এম শাখা | |
জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখা |
|
ভূমি অধিগ্রহণ শাখা |
|
শিক্ষা শাখা |
|
স্থানীয় সরকার শাখা | |
রাজস্ব শাখা |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস