মহেশখালী জেটিঃ
একদা মহেশখালী দ্বীপটি কক্সবাজার মূল ভূ-খন্ডের সাথে সংযুক্ত ছিল। ১৫৬৯ খ্রিস্টাব্দে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপটি কক্সবাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কক্সবাজার শহরের কস্ত্তরাঘাট জেটি বা ৬নং জেটির ঘাট থেকে ১০-১২ মিনিটের মধ্যে বাঁকখালী ও বঙ্গোপসাগর মোহনা পাড়ি দিয়ে স্পীড বোট যোগে মহেশখালী জেটি তথা মহেশাখালী দ্বীপে পৌঁছা যায়। গাছের বোট দিয়েও মহেশখালী যাওয়া যায় সময় লাগে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট। মহেশখালী একদা গাছপালা ঢাকা গভীর অরণ্যে ভরপুর ছিল। হিংস্র বাঘ, ভাল্লুক ও হাতির চারণভূমি রূপে অনাবাদি অবস্থায় পতিত জমি ছিল। মহেশখালী জেটি নির্মিত হওয়ার আগে লোকজন মহেশখালীতে যাতায়াত করতে বিব্রত বোধ করতেন। কেননা মহেশখালী যাওয়া মানে কাদাভেজা পায়ে লুঙ্গী, থাবিন কিংবা প্যান্ট হাঁটুর ওপরে তোলে জনসম্মুখে লজ্জাবনতভাবে হেঁটে যাওয়া। মহেশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের এ দুঃখ মোচন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড এতদ্ঞ্চলে বহুল প্রতীক্ষিত জেটিটি নির্মিত হয়। ৩ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৮২ পিলার বিশিষ্ট জেটিটির দৈর্ঘ্য ৬৯৫ মিটার ও প্রস্থ ৬ মিটার। বাঁকখালী খালের নাব্যতা ও ভরাটের কারণে জেটিটি কয়েকবার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। জেটি নির্মাণের সাথে সাথে দ্বীপ উপজেলার চেহারা আমূল পরিবর্তন হয়ে যায়। এলাকার রাস্তাঘাট, বসতগৃহ, স্যানেটারী ব্যবস্থা নিমিষে বদলে যায়, পাশাপাশি ব্যবসা বানিজ্যে প্রাণ ফিরে আসে এবং লোকজন দ্রুতলয়ে পেশা পরিবর্তন করে ফেলে। জেটির পাশে রয়েছে রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি পাড়া নাম ‘দক্ষিণ রাখাইনপাড়া’। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক এ পাড়ায় স্থিত বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিসংযোগ করে তিনজন নিরীহ শিষ্যকে জ্বলন্ত পুরিয়ে মারা হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS