ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, চকরিয়াঃ
জেলা শহরে কোন পার্ক না থাকায় পর্যটন নগরী কক্সবাজারের শতভাগ জনগণ ‘পার্ক’ নামীয় শব্দের সাথে এখনো অপরিচিত। পর্যটন রাজধানী নামে খ্যাত কক্সবাজারের শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্য শিশু পার্ক, ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য খোলামেলা প্রশস্ত জায়গা ও বোটানিকেল গার্ডেন থাকার কথা। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ঘনঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ভূমিকম্প, সুনামি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস থেকে পরিত্রাণের জন্য অভয়ারন্য বনাঞ্চল থাকাও আবশ্যক। সময়ের প্রয়োজনে হয়তো এসব একদিন হবে কিন্ত দ্রুত হলে মন্দ কি। তবে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা নামক স্থানে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রচুর গাছ গাছালিতে ভরপুর দৃষ্টিনন্দন একটি বড় পার্ক রয়েছে। আটটি ব্লকে ভাগ করে গড়ে তোলা এ পার্কে মুক্ত পরিবেশে হাঁটাচলা করা যায়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনায়াসে বেড়ানো যায়। এ পার্কে ঢাকায় মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানার মতো বেশি সংখ্যক পশু পাখি না থাকলেও কোন পশু পাখি কমতি নেই। আছে সিংহ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, নানা প্রজাতির হরিণ, হনুমান, বাঁশ ভল্লুক, ময়ুর, বন্য শুকর, নানা প্রজাতির পাখি, সাপ, কুমির, জলহস্তি, বানর, হরিণ, হাতি, বনগরু ইত্যাদি। এখানে স্থাপিত একাধিক পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে নয়নাভিরাম সৌর্ন্দয ও পশু পাখিদের বিচরণ নিরাপদে পর্যবেক্ষণ করা যায়। নানা প্রজাতির বড় বড় বৃক্ষ, মূল্যবান গাছ গাছালি আর দুর্লভ ও ঔষধী লতা পাতা গুল্ম রয়েছে এ পার্কে। চকরিয়া বাসষ্টেশন থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার আর জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। প্রায় নয়শ হেক্টর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত দেশের একমাত্র সাফারি পার্কটি নাম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র নামে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক’ রাখা হয়েছে। কিছু পশুপাখি খাঁচায় বন্দি হলেও এ পার্কে অবস্থারত অধিকাংশ পশুপাখিদের বিচরনের জন্য প্রচুর উন্মুক্ত জায়গা রয়েছে। পর্যটকদের জন্য রয়েছে বিশ্রামাগার ও ডরমেটরী। অকস্মাৎ বন্যহাতির পাল পার্কে অযাচিত ও অবৈধ প্রবেশ করে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষকে অবশ্য টেনশনে রাখে। পার্কে অবস্থানরত পশু পাখিদের এহেন অসুবিধার দিক বিবেচনায় সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষকে আরো সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত বলে প্রাণি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। হরিণ প্রজনন কেন্দ্রটি পার্কের সাথে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এখানে রয়েছে ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম ও বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র। সাফারি পার্কের প্রবেশ মুখে রয়েছে ইট কংক্রিট দিয়ে নির্মিত বিশালাকৃতি ডাইনোসর, হাতি প্রতিকৃতি। মূল ফটকের বামে রয়েছে ত্রিশ লক্ষের বিনিময়ে অর্জিত সুজলা-সুফলা সবুজ শস্য-শ্যামলায় প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানচিত্র (ডিসপ্লে ম্যাপ) ও পার্কের বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা। সাফারি পার্ক দিনে দিনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে আর পর্যটন মৌসুমে পর্যটকদের একটি অংশ পার্কের বিভিন্ন লোকেশনে পিকনিক আয়োজন করে থাকে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস